ফোর্বসের ২০২৪ সালের বিলিয়নিয়ার তালিকা অনুযায়ী, ভারতের শিক্ষা-প্রযুক্তি জায়ান্ট বাইজুসের (Byju’s) প্রতিষ্ঠাতা বাইজু রবীন্দ্রন একটি নাটকীয় পতনের মুখোমুখি হয়েছেন। তাঁর মোট মোট সম্পদের পরিমাণ ২.১ বিলিয়ন ডলার থেকে (বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ২৩ হাজার কোটি টাকার বেশি) এখন শূন্যে নেমে এসেছে।
এ বিষয়ে ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত বাইজুস দ্রুত সময়ের মধ্যে ভারতের সবচেয়ে মূল্যবান স্টার্টআপে পরিণত হয়েছিল। ২০২২ সালে এই প্রতিষ্ঠানটি তার সর্বোচ্চ মূল্যে পৌঁছেছিল। কোম্পানির উদ্ভাবনী শিক্ষামূলক অ্যাপটি ভারতের শিক্ষাক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়েছে বলে মনে করা হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে এমবিএ শিক্ষার্থীরাও এর দ্বারা উপকৃত হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আর্থিক সমস্যা ফাঁস হয়ে যাওয়া এবং নানা বিতর্ক এর খ্যাতিকে কলঙ্কিত করেছে এবং এর মূল্যকে তলানিতে নিয়ে এসেছে।
বাইজুস-এর আর্থিক সমস্যাগুলো প্রকাশ্যে আসে ২০২২ সালের মার্চে। সে সময় প্রতিষ্ঠানটি ১ বিলিয়নেরও বেশি লোকসানের তথ্য প্রকাশ করে। এর ফলে এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে রবীন্দ্রনকে প্রতিষ্ঠানের সিইও পদ থেকে অপসারণের পক্ষে ভোট দেয় শেয়ারহোল্ডাররা।
মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো ২০২৩ সালে বিদেশে ফান্ডিং বিধি সংক্রান্ত ভারতীয় আইন লঙ্ঘন করার অভিযোগ আনা হয় এই বাইজুসের বিরুদ্ধে। ভারতীয় সংস্থা ইডির পক্ষ থেকে ৯ হাজার কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় প্রতিষ্ঠানটিকে।
এ অবস্থায় আর্থিক সমস্যাগুলো মোকাবিলা, অপারেটিং কাঠামোকে সহজ করা, খরচ কমানো এবং নগদ অর্থের প্রবাহ বাড়াতে গত বছরের অক্টোবরে ব্যবসায়িক পুনর্গঠন শুরু করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। এর ফলে প্রতিষ্ঠানের পাঁচ শতাধিক কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়। তবে গত তিন মাস ধরে প্রতিষ্ঠানটি তার অবশিষ্ট কর্মীদের বেতনই দিতে পারছে না বলে জানা গেছে।
এবার ফোর্বসের বিলিয়নিয়ার তালিকায় ২ হাজার ৭৮১ জন স্থান করে নিয়েছেন। তাঁদের সম্মিলিত সম্পদের পরিমাণ ১৪.২ ট্রিলিয়ন ডলার। তবে বিলিয়নিয়ারদের মধ্যে প্রায় এক চতুর্থাংশের ভাগ্য ২০২৩ সালের তুলনায় কমেছে। আর ১৮৯ জন বিলিয়নিয়ার স্ট্যাটাস হারিয়ে তালিকা থেকে বাদ পড়ে গেছেন।