ব্রাজিলিয়ান ফুটবল সুপারস্টার নেইমার মাঠে ফিরেছেন এক বছর পর। ঠিকঠাক বলতে গেলে, ৩৬৯ দিন পর। যে কারণে গোটা ব্রাজিল তো বটেই বিশ্বব্যাপী নেইমারের অগণিত ভক্ত-সমর্থকরা স্বাভাবিকভাবেই দারুণ খুশি। অপেক্ষা তাদের, আগের নেইমারকে ফিরে পাওয়ার এবং বিশ্বকাপে তার ভালো করার দিকেও তাকিয়ে সবাই।
জানা যায়, ২০২৩ সালের অক্টোবরে দক্ষিণ আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাই ম্যাচে উরুগুয়ের বিপক্ষে হাঁটুতে চোট পান নেইমার। লিগামেন্ট ইনজুরিতে পড়ে লম্বা সময়ের জন্য খেলার বাইরে ছিটকে যান আল হিলালের এই ব্রাজিলিয়ান তারকা ফরোয়ার্ড। পরের মাসেই হাঁটুতে অস্ত্রোপচার করাতে হয় তার। এরপর চলে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া। অবশেষে গত ২০ অক্টোবর সৌদি ক্লাবটির ট্রেনিং সেশনে দেখা মেলে নেইমারের। পরদিন রাতে এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আরব আমিরাতের ক্লাব আল আইনের বিপক্ষে খেলতেও দেখা যায় সময়ের অন্যতম আলোচিত এই ফুটবলারকে।
হাঁটুর ইনজুরিতে গত বছর অক্টোবর থেকে মাঠের বাইরে থাকা নেইমারের খেলা দেখতে আল আইনের হাজ্জা বিন জায়েদ স্টেডিয়াম সেদিন কানায় কানায় পূর্ণ ছিল দর্শকে। প্রথমার্ধের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামেন ৩২ বছরের ব্রাজিলিয়ান ফুটবল সুপারস্টার। ৩৬৯ দিন পর আল হিলালের জার্সি গায়ে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আল আইনের বিপক্ষে ম্যাচের ৭৭ মিনিটে মাঠে নামেন।
সালেম আল দাওসারির বদলি হিসেবে মাঠে নামার কিছুক্ষণ পরেই গোল করার খুব কাছাকাছি গিয়েছিলেন নেইমার। ৮৭ মিনিটে তার শট গোলরক্ষকের হাতে লেগে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। যোগ করা সময়ে আরেকটি সুযোগ মিস করেন। গোল পেলে প্রত্যাবর্তনটা নিঃসন্দেহেই অন্যরকম হতো আল হিলাল তারকার। ৯ গোলের রোমঞ্চকর ম্যাচটি ৫-৪ ব্যবধানে জেতে সৌদি ক্লাবটি।
গত বছর আগস্টে ফরাসি ক্লাব পিএসজি ছেড়ে আল হিলালে যোগ দেওয়ার পর চোটের কারণে সৌদি ক্লাবটিতে মাত্র ষষ্ঠ ম্যাচ খেললেন ব্রাজিলের হয়ে ১২৮ ম্যাচে ৭৯ গোল করা নেইমার। আর সর্বশেষ চোটের কারণে এ বছর জুন-জুলাইয়ে কোপা আমেরিকা ফুটবলে খেলা হয়নি তার। বাইরে ছিলেন দক্ষিণ আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাই থেকেও। নেইমারের অনুপস্থিতিতে ব্রাজিলের নতুন কোচ দরিভাল জুনিয়রও সমন্বয় আনতে পারছেন না খেলোয়াড়ের মধ্যে। তবে আশার কথা, বিশ্বকাপ বাছাইয়ে সর্বশেষ পেরুর বিপক্ষে চার গোলের উৎসব করে জিতেছে রেকর্ড পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ১৯ খেলায় পাঁচ জয়, এক ড্র ও চার হারে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে উরুগুয়ের কাছে এক গোল পেছনে পড়ে টেবিলের চার নম্বরে উঠেছে ব্রাজিল। আর্জেন্টিনা ২২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে, কলম্বিয়া ১৮ পয়েন্ট দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
এদিকে, ২০২৬ বিশ্বকাপ এখনও দূরের পথ। নেইমার যেমন চোটপ্রবণ, তাতে মাঝের দুই বছরে তার সুস্থতার নিশ্চয়তা দেওয়াও কঠিন। তবে গত এক দশকের সবচেয়ে জাদুকরি খেলোয়াড়ের মাঠে ফেরায় খুশি হননি কে? ফিফা থেকে সান্তোস, অভিনন্দন জানিয়েছে নেইমারকে। তারকা ফুটবলাররাও আছেন এ তালিকায়। আর আছে সিবিএফ’, ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন। আনন্দ তো বটেই, নেইমারের মাঠে ফেরায় সিবিএফের স্বস্তিটাই সম্ভবত সবচেয়ে বেশি। সিবিএফের বিবৃতিটাই বলে দেয় সব।
বিবৃতিতে সিবিএফ বলেছে, ‘নেইমার ব্রাজিলিয়ান ফুটবল জাদুর প্রতীক এবং সারা বিশ্বের ভক্তদের মোহাবিষ্ট করে রাখে। ভক্তরা গর্ব নিয়ে ব্রাজিল, সান্তোস, বার্সেলোনা ও আল হিলালের ১০ নম্বর জার্সি পরে এবং পিঠে নেইমারের নাম লেখা থাকে।