
মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস মার্কেটে আসছে নতুন একট প্রতিষ্ঠান। যারা সরাসরি হয়ে উঠছে বিকাশ, রকেট ও নগদের মতো প্রতিষ্ঠানের প্রতিদ্বন্দ্বী। নতুন প্রতিষ্ঠানটির নাম ট্যাপ— ট্রাস্ট অজিয়াটা পে।
বাংলাদেশের ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড এবং মালয়েশিয়ার অজিয়াটা গ্রুপের মিলিত উদ্যোগ এটি।
এই পণ্যটি বাজারে আনার আগে প্রতিষ্ঠান দুটি ট্রাস্ট অজিয়াটা ডিজিটাল নামের একটি যৌথ-উদ্যোগি প্রতিষ্ঠান গঠন করে।
ট্যাম্প ৫১ শতাংশ শেয়ার থাকবে ট্রাস্ট ব্যাংকের এবং অজিয়াটার কাছে থাকবে ৪৯ শতাংশ শেয়ার।
ট্যাপ মূলত মোবাইল ওয়ালেট সার্ভিস নিয়ে কাজ করবে। গত বছর বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে তারা অনুমতিপত্র পেয়েছে।
সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেন, আমি বিশ্বাস করি তা পূরণে এই মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
ট্যাপ একাউন্ট খোলার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রের স্ক্যান কপি এবং একটি সেলফিই যথেষ্ট হবে।
ট্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকরা টাকা জমা দিতে ও উত্তোলন করতে পারবেন, ইউটিলিটি বিল দিতে পারবেন, সামরিক বাহিনীর নিয়োগ বিষয়ক ফি দিতে পারবেন, কেনাকাটার মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন, বিদেশ থেকে রেমিটেন্স পাঠাতে পারবেন এবং মোবাইল ব্যালেন্স রিচার্জ করতে পারবেন।
একই সাথে ট্যাপের ব্যবহারকারিরা ট্রাস্ট ব্যাংকের টি-ক্যাশের কিছু সুবিধাও পাবেন, যেমন— ৫৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফি এবং জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট সম্পর্কিত ফি দিতে পারবেন।
অজিয়াটা বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল নেটওয়ার্ক রবির মূল মালিক। তারা মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা, কম্বোডিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশে মোবাইল অপারেটর চালানোর পাশাপাশি আর্থিক সেবাও প্রদান করে। কিন্তু বাংলাদেশে মোবাইল অপারেটররা আর্থিক সেবা দিতে পারে না।
বাংলাদেশের আইনে মোবাইল অপারেটররা যেহেতু আর্থিক সেবা দিতে পারে না, সেহেতু অজিয়াটা গ্রুপ আর্মি ওয়েলফেয়ারের মালিকানাধীন ট্রাস্ট ব্যাংকের সাথে চুক্তি করে এবং ট্যাপের উদ্যোগ নেয়।
ট্যাপ এমন সময়ে বাজারে এলো, যখন এই ধরনের সেবার জনপ্রিয়তা বাংলাদেশে বিস্ময়করভাবে বাড়ছে।
বিশেষ করে মহামারীর সময়ে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস প্রায় সব নাগরিকের দৈনন্দিন প্রয়োজনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশের তথ্য মতে, অক্টোবর মাসে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসে মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিলো ৫৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। ঠিক আগের মাসের তুলনায় গত অক্টোবরে লেনদেন বেড়েছে ৮.৫ শতাংশ।
যারা সরাসরি ব্যাংকের সাথে লেনদেন করেন না, তারা এই সেবা বেশি ব্যবহার করেন।
মহামারীর সময়ে কেনাকাটা করা, বেতন-ভাতা পরিশোধ করা এবং বিভিন্ন ধরনের বিল দেওয়ার জন্যও এই সেবা দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
অক্টোবর মাসে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সেবার মাধ্যমে ১৭শত কোট টাকার বেশি অর্থের কেনাকাটা করা হয়েছে।
মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে পিপল-টু-পিপল মানি ট্রান্সফার।
এর আগে এজেন্টদের কাছ থেকে নগদ টাকা উত্তোলন ছিলো সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ফিচার।
বর্তমানে এই খাতের এক নম্বর প্রতিষ্ঠান হলো বিকাশ। এ ছাড়া ডাচ বাংলা ব্যাংকের রকেট ও বাংলাদেশ পোস্ট অফিসের নগদও দারুণ সফলতা দেখাচ্ছে।