
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ১২টি এতিমখানার ৩১৭ জন এতিমের নামে ৩৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল সরকার।
কিন্তু সে সব টাকা গায়েবের অভিযোগ পাওয়া গেছে। চলতি বছরের জুন মাসে এগুলো বরাদ্দ দেয়া হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর কার্যালয়ও কোনো তথ্য দিতে পারেনি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, মহামারি করোনাভাইরাসের সুযোগ কাজে লাগিয়ে এবং বিশেষ উন্নয়ন খাতে ব্যয় দেখিয়ে এসব টাকা গায়েব করে দিয়েছে এতিমখানা ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
তবে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবি, করোনার কারণে এতিমখানা বন্ধ ছিল। তাই টাকাগুলো উন্নয়ন খাতে ব্যয় করা হয়েছে। যদিও উন্নয়ন খাতে অর্থ ব্যয়ের কোনো প্রমাণ তারা দিতে পারেনি।
প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা জানায়, তারা টাকা বরাদ্দের কথা কিছুই জানে না। উল্টো প্রতিষ্ঠানকে মাঝে-মধ্যে টাকা দিতে হয়।
অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ইসলামিয়া এতিমখানা, ভাঙ্গা পশ্চিমপাড়া একমাতুস সুন্নাহ এতিমখানা, বাংলাদেশ ইসলামি মিশন শিশুসদন এতিমখানা, রহমানিয়া এতিমখানা, মফিজউদ্দিন ইসলামিয়া এতিমখানা, বালিয়াহাটি হায়েজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা, ডাঙ্গারপাড় স্বতন্ত্র ইসলামিয়া এতিমখানা, মুনসুরাবাদ ইসলামিয়া শিশুসদন এতিমখানা, সোনাময়ী লোকমানিয়া তারিমুস সুন্নাহ এতিমখানা, দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসা ও এতিমখানা, পল্লীবেড়া একামাতেদিন এতিমখানা ও ফয়জুল উলুম এতিমখানা।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ইসলামি মিশন শিশুসদন এতিমখানা গত মার্চ মাস থেকেই বন্ধ। এমনকি এ নামে কোনো সাইনবোর্ড বা আবাসস্থলও নেই। অথচ প্রতিষ্ঠানটি ৪২ জন এতিমের নামে ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা উত্তোলন করেছে। সোনাময়ী লোকমানীয় তারিমুস সুন্নাহ এতিমখানায় মাত্র একটি কক্ষ। অথচ তারা ১৬ জন এতিম দেখিয়ে ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা উত্তোলন করেছে।
মফিজউদ্দিন ইসলামিয়া এতিমখানায় কোনো এতিম শিক্ষার্থী নেই। যারা আছে তারা টাকা দিয়ে পড়াশোনা করছে।
অথচ প্রতিষ্ঠানটি ৪৮ জন এতিমের নামে ৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা উত্তোলন করেছে।
মুনসুরাবাদ ইসলামি এতিমখানার কোনো আবাসস্থল বা সাইনবোর্ড নেই। যা আছে শুধু কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোতেও একই চিত্র।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, এতিমদের নামে বরাদ্দকৃত টাকার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের। এগুলো কোনোভাবেই উন্নয়ন কাজে ব্যয় করার সুযোগ নেই।
এতিমদের নাম শোনার পর বরাদ্দ দেওয়া হয় জানিয়ে তিনি বলেন, তবুও কিছু প্রতিষ্ঠান অনিয়ম করছে।
আগামীতে যাচাই-বাছাই করে অনুদান দেয়া হবে এবং কোনো ধরনের অনিয়ম পেলেই সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।