
দেশি ফলের পাশাপাশি বিদেশি ফল উৎপাদনে আগের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বিশ্বের শীর্ষ দেশীয় ফল উৎপাদনে এখন ১০ নম্বরে বাংলাদেশ। এছাড়া বিশ্বে কাঁঠাল উৎপাদনে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে আমে উৎপাদনে সপ্তম ও পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম স্থানে রয়েছে সুজলা সুফলা দেশটি।
ফল গবেষকরা জনিয়েছেন, দুই যুগ আগেও আম, কাঁঠাল, লিচু, দেশি বরই, জাম, কলা ছিল এ দেশের প্রধান ফল। এখন দেশে ৭২টিরও বেশি দেশি-বিদেশি ফল চাষ হচ্ছে। কয়েক বছর আগেও সংখ্যাটি ছিল ৫০-এর ঘরে।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সবশেষ তথ্যে জানা গেছে, ২০ বছর ধরে বাংলাদেশে সাড়ে ১২ শতাংশ হারে ফল উৎপাদন বাড়ছে। একই সঙ্গে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ চারটি ফলের মোট উৎপাদনে বাংলাদেশ শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় স্থান পেয়েছে।
কাঁঠাল উৎপাদনে বিশ্বে দ্বিতীয়, আমে সপ্তম ও পেয়ারায় অষ্টম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। আর মৌসুমি ফল উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান বর্তমানে ১০ম। আম, কাঁঠালের বাইরে মৌসুমি ফলের মধ্যে আছে জাম, লিচু, কুল, কামরাঙা, পেঁপে, বেল, লেবু, আনারস, আতা, সফেদা, লটকন, তরমুজ ইত্যাদি।
একই সঙ্গে নিত্যনতুন ফল চাষের দিক থেকেও বাংলাদেশ সফলতা পেয়েছে। কম আয়তনের দেশ হয়েও ফল চাষে জমি বাড়ার দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষস্থানে। বছরে ১০ শতাংশের বেশি হারে ফল চাষের জমি বাড়ছে বলে জানায় ফল গবেষকরা। এটি আগামী কয়েক বছরে দ্বিগুণ হবে।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এক যুগ আগেও দেশে ৫৬টি ফলের চাষ হতো। যা বর্তমানে চাষ হচ্ছে ৭২টি ফল। আরো ২০টি ফল বাংলাদেশের চাষ উপযোগী করার জন্য গবেষণা চলছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, নতুন করে চাষ শুরু হওয়া ফলের মধ্যে ড্রাগন ফলের ২৩টি আলাদা প্রজাতি, খেজুরের ১৬টি, নারিকেলের দুটি প্রজাতি, কাঁঠালের একটি, আমের তিনটি নতুন প্রজাতি চাষে সফলতা পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে সেগুলো কৃষক পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
শুধু ফলের উৎপাদন বাড়ার দিক থেকে নয়, বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু ফল খাওয়ার হারও গত এক যুগে বেড়েছে দ্বিগুণ। পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, ২০০৬ সালে বাংলাদেশের মানুষ দিনে ৫৫ গ্রাম করে ফল খেত, যা বর্তমানে ৮৫ গ্রামে উঠে এসেছে।