
দেশের সড়কে অত্যাধুনিক ও ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় আসছে অ্যাপভিত্তিক বৈদ্যুতিক থ্রি হুইলার (তিন চাকার বাহন) ‘বাঘ’। এরইমধ্যে ঢাকার গাজীপুরে কারখানা স্থাপন করে পরীক্ষামূলকভাবে কিছু গাড়ি তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাঘ ইকো মটরস লিমিটেড।
প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট কাজী জসিমুল ইসলাম বাপ্পি জানান, সরকারের পৃষ্টপোষকতা পেলে দেশের ভেতর স্বস্তিদায়ক যাত্রীসেবার পাশাপাশি এই ‘বাঘ’ রপ্তানি হতে পারে বিদেশেও। তিনি জানান, বাংলাদেশের ব্র্যান্ড ‘বাঘ’কে সরকার যদি রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনে, তা হলে বড় পরিসরে উৎপাদন শুরু করবেন তিনি। এতে একদিকে যাত্রীদের খরচ কমবে, অন্যদিকে সরকার বছরে অন্তত ১২ হাজার কোটি টাকার বাড়তি রাজস্ব পাবে।
তিনি আরো জানান, তার প্রতিষ্ঠান ‘বাঘ’ হবে পৃথিবীর প্রথম অ্যাপভিত্তিক কোম্পানি। কারণ, উবার, পাঠাও-এদের নিজস্ব গাড়ি থাকে না। এমনকি পৃথিবীর কোথাও অ্যাপভিত্তিক নিজস্ব পরিবহনও নেই। কিন্তু বাঘ সম্পূর্ণ দেশীয় পেটেন্টে তৈরি তিন চাকার ইকো-ট্যাক্সি।
প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট জানান, রাস্তায় যেসব ইজিবাইক চলছে, তাতে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এসিড ব্যটারি ব্যবহার হচ্ছে। কিন্তু বাঘ-এ থাকবে উন্নতমানের লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি। এর ব্যাটারি ও চার্জারে থাকবে মাইক্রোচিপ। যাতে একটি অ্যাপস প্রিলোডেড থাকবে (বিল্টইন)।
কাজী জসিমুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, প্রতিটি গাড়িতে বিকল্প হিসেবে থাকছে সোলার চার্জিং সিস্টেম। সোয়াপ (ব্যাটারির আলাদা চার্জ ব্যবস্থা) ব্যাটারি হওয়ার কারণে চার্জের জন্য বাহনটিকে থেমে থাকার প্রয়োজন হবে না। একবার চার্জে ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত চলবে।
অ্যাপভিত্তিক এই গাড়িতে থাকছে চালকসহ সাতজনের বসার ব্যবস্থা। এছাড়া ওয়াইফাই, জিপিএস, টেলিভিশন, ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরা, ইন্টারনেট সুবিধাও থাকছে এতে। বাহনটিতে ভাড়া মেটাতে ব্যবহার করা যাবে এটিএম কার্ডসহ যেকোনো মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপস। প্রচলিত তিনচাকার বাহন থেকে বড় আকারের চাকার ব্যবহারে কমবে দুর্ঘটনা। উন্নতমানের স্টিল দিয়ে কাঠামো তৈরি হবে বলে বাহনটি হবে বাকিদের তুলনায় বেশি টেকসই।
কাজী জসিমুল ইসলাম দাবি করেন, প্রচলিত ইজিবাইকে ব্যবহৃত অ্যাসিড ব্যাটারিতে মূলত আবাসিক ও অবৈধ বিদ্যুৎ দিয়ে চার্জ হয়। এর ফলে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার বিদ্যুৎ অপচয় হয়। ‘বাঘ’-এর চার্জার নিয়ন্ত্রিত হবে সিএমএস বা চার্জিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে এবং ব্যাটারি নিয়ন্ত্রিত হবে ব্যাটারি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে। এই দুটোতে দুটো ‘ব্রেইন সফটওয়্যার’ আছে। বৈধ সংযোগ ছাড়া এগুলো কাজ করবে না।
তিনি বলেন, ‘বাঘ’ শুধু দেশের সড়কেই দাপিয়ে বেড়াবে না, বিদেশের সড়কেও দেখা মিলবে। বাঘ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা যাবে। দেশে বড় গাড়ির জন্য যে স্টিল ব্যবহৃত হয়, সেটা দিয়েই বাঘ তৈরি হবে। ফলে দুর্ঘটনায় সিএনজি অটোরিকশাকে যেভাবে দুমড়েমুচড়ে যেতে দেখা যায়, বাঘ-এ তেমনটি হবে না।