চট্টগ্রামের দোহাজারীতে আদালতের নির্দেশনা সত্ত্বেও সরকারি সিটের জায়গা বাদ দিয়ে পৌর প্রশাসকের সঙ্গে প্রকৌশলীর আতাতে ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গার উপর আরসিসি ঢালাই সড়ক নির্মাণের অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। রাতের আঁধারে কাজ চলমান থাকায় এলাকায় দাঙ্গা হাঙ্গামার ভয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও দাবি করেছেন তারা।
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ জানান ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী সিরাজুল ইসলাম সহ অন্যান্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চন্দনাইশ থেকে দোহাজারী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড কিল্লাপাড়া হয়ে আব্দুর রশিদের দোকান থেকে মতলবের বাড়ি পর্যন্ত সড়কে স্থায়ী আর সিসি ঢালাই করা হচ্ছে। তবে সরকারি সরকারি সিটের রাস্তা বাদ দিয়ে সম্পূর্ণভাবে মালিকানাধীন জায়গার ওপর দিয়ে সড়কের কাজ করছে। আদালতের নির্দেশ থাকার পরও পৌর প্রশাসকের সঙ্গে আতাত করে ও টিকাদার এবং দখলধারী সুবিধাভোগীরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তারা ৯০ দিনের কাজ ২৪ দিনে সম্পন্ন করে।
সিরাজুল ইসলাম বলেন,সড়কটির টেন্ডার প্রকাশের পর গেল ২৫ মে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সুপারিশসহ গণস্বাক্ষর নিয়ে প্রশাসক বরাবর রাস্তাটি সার্ভেয়ার দিয়ে চিহ্নিত করে কাজ করার জন্য আবেদন করা হয়। কিন্তু এরপরও কাজ চালু থাকায় গত ৪ সেপ্টেম্বর ভুক্তভোগী ভূমির মালিক ও দখলবাজ সুবিধাভোগীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এরপর ৬ সেপ্টেম্বর দোহাজারী পৌরসভার অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পে দখল করা ভূমির ওপর থাকা স্থাপনা সার্ভেয়ার দ্বারা পরিমাপ করে লাল রং দিয়ে চিহ্নিত করে অপসারণের নির্দেশ দেয়া হয়। এরপরও ভুক্তভোগী ভূমি মালিকদের মামলার জড়ানোর হুমকি দেয় প্রশাসন। এমন পরিস্থিতিতে গত ২২ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকের আবেদন করে কোনো সাড়া না পাওয়ায় আমরা আদালতে যাই। আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত ২৫ সেপ্টেম্বর নির্মাণ কাজে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে চন্দনাইশ থানাকে নির্দেশ দেয়। নির্দেশ পাওয়ার পরও কাজ চলমান থাকলে পুনরায় আমরা আদালতে যাই। সর্বশেষ ২৮ সেপ্টেম্বর আদালত পরবর্তী শুনানীর তারিখ পর্যন্ত কাজ বন্ধের আদেশ দেন। এরপরও প্রশাসক, ঠিকাদার ও রাস্তা দখলকারীরা কাজ করছে।
এছাড়াও গত ৭ অক্টোবর বিকেলে শফিউল আলম পারভেজ নামক এক ব্যক্তি মানববন্ধন করে চন্দ্রনাইশ থেকে দোহাজারী হয়ে আব্দুর রশিদের দোকান পর্যন্ত সড়কে প্রতিবন্ধী সিরাজুল ইসলাম ও নিঃস্বদের সড়কে কোন জায়গা নেই মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্ত দিনমজুর জরিনা আক্তার ও প্রতিবন্ধী সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের বাড়ির ঘেরা-বেড়া উচ্ছেদ করে জোর করে রাস্তা বানিয়ে দিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। পৈত্রিক ভূমির জায়গা বাদ দিয়ে দখল করা সরকারি সিটের জায়গায় সড়ক নির্মাণ, বেআইনীভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের জায়গায় নির্মিত রাস্তা ভূমির উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং প্রভাবশালীদের দখলে থাকা সরকারি জায়গাও উদ্ধার করে জনস্বার্থে উন্মুক্ত ও দখলবাজ প্রভাবশালী মহলের হুমকি থেকে নিরাপত্তা প্রদানের দাবি জানাই।
বিষয়টা নিয়ে জানতে চাইলে চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও দোহাজারী পৌর প্রশাসক নাসরিন আক্তার জানান, অভিযোগ পুরোপুরি সত্য নয়। এখানে রাস্তা আগে থেকেই ছিল। আমরা আইনবিধি মেনে সেটির উন্নয়ন করেছি। আর সরকারি জায়গা কেউ যদি দখল করে থাকে, তা হলে আইন অনুযায়ী আমরা সেটি উদ্ধার করব। স্থানীয় সংসদ সদস্যের অনুরোধ উপেক্ষা করে সড়কের আরসিসি ঢালাই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংসদ সদস্যের অনুরোধেই ওই সড়কের আরসিসি ঢালাই করা হয়েছে।