
কক্সবাজারে সেন্টমার্টিন ভ্রমণের কথা বলে টেকনাফে নিয়ে গিয়ে অপহরণের শিকার হয়েছে চার স্কুলছাত্র। এরপর অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোনে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবি জানিয়েছে তারা। অপহৃত ছাত্ররা উখিয়া উপজেলার সোনারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
টেকনাফ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল আলিম জানান, বুধবার দিবাগত রাতে অপহৃত স্কুলছাত্রদের স্বজনদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর থেকে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।
অপহৃতরা হলো উখিয়া উপজেলার সোনারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র জাহেদুল ইসলাম, অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মিজানুর রহমান, মোহাম্মদ কায়সার ও মিজানুল ইসলাম। তাদের সবার বাড়ি রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক সংলগ্ন পেঁচারদ্বীপ এলাকায়।
অপহরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ২৬ নম্বর ব্লকের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম ও মোহাম্মদ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে। তারা রামুর খুনিয়াপালং ইউনিয়নের পেঁচারদ্বীপ এলাকায় বাতিঘর নামের একটি আবাসিক কটেজের কর্মচারী। ঘটনার ব্যাপারে পুলিশ বুধবার রাতে অভিযোগ পেলেও ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার সকালে।
অপহৃত স্কুলছাত্রদের স্বজনদের বরাত দিয়ে পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল আলিম বলেন, রামুর পেঁচারদ্বীপের বাসিন্দা ও সোনারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় বাতিঘর নামের একটি আবাসিক কটেজের কর্মচারী জাহাঙ্গীর আলম ও ইব্রাহিমের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সুবাদে গত ৭ ডিসেম্বর সকালে রামুর পেচাঁরদ্বীপ এলাকা থেকে জাহাঙ্গীর ও ইব্রাহিম স্কুলছাত্রকে সেন্টমার্টিন ভ্রমণের কথা বলে টেকনাফের উদ্দ্যেশে রওনা দেয়। এক পর্যায়ে ওইদিন সকাল ১০টার দিকে স্কুলছাত্রদের নিয়ে টেকনাফের হোয়াইক্যং এলাকায় নিয়ে যায়। এরপর থেকে স্কুলছাত্রদের খোঁজ মিলছিল না।
এরই মধ্যে বুধবার রাতে নিখোঁজ থাকা স্কুলছাত্রদের স্বজনদের কাছে মোবাইল ফোনে অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন করে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাদের মুক্তিপণ বাবদ ২০ লাখ টাকা দাবি জানায়। মুক্তিপণ না দিলে স্কুলছাত্রদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়।
টেকনাফ থানার পরিদর্শক বলেন, পরে বিষয়টি নিখোঁজ স্কুলছাত্রদের স্বজনরা রামু থানা পুলিশকে অবহিত করেন। এরপর বিষয়টি রামু থানা পুলিশ টেকনাফ থানায় অবহিত করে।
ঘটনার ব্যাপারে রামু থানার ওসি আনোয়ারুল হোছাইন বলেন, অপহৃত স্কুলছাত্রদের স্বজনরা বুধবার রাতে ঘটনার ব্যাপারে পুলিশকে অবহিত করেন। পরে ঘটনার ব্যাপারে তাৎক্ষণিক টেকনাফ থানা পুলিশকে জানাই।
টেকনাফ থানার পরিদর্শক আব্দুল আলিম জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর থেকে রামু থানা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ হোয়াইক্যংসহ টেকনাফের সম্ভাব্য বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে। অপহৃত স্কুলছাত্রদের অক্ষত অবস্থায় উদ্ধারে এবং ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ আন্তরিকভাবে তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে।