নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ভোটগ্রহণের বাকি আর মাত্র ৪ দিন। জমে উঠেছে শেষ কয়েকদিনের নির্বাচনি প্রচারণা। বিশেষ করে কথার লড়াইয়ে কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছে না। এছাড়া নানা পদ্ধতিতে ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা চালাচ্ছেন প্রার্থীরা।
একইসাথে অভিযোগ পাল্টা-অভিযোগে উত্তাপ ছড়াচ্ছে পুরো সিটিতে। তবে, নির্বাচনে না থেকে আলোচনায় স্থানীয় সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান।
মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) সকালে নগরীর ১২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রচার শুরু করেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াত আইভী। দুপুর পর্যন্ত এই ওয়ার্ডে প্রচারণা চালাবেন তিনি।
এসময় আইভী শামীম ওসমানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, "শামীম ওসমান কাকে সমর্থন দেবেন তা আমি জানি না। শামীম ওসমানের সমর্থনের প্রয়োজন নেই। আমার সমর্থন নারায়ণগঞ্জের মানুষ, তারা বলেছেন নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী।
এছাড়া শামীম ওসমান এমপি হিসেবে প্রচারণা চালাতে পারেন না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের এই মেয়র প্রার্থী। এসময় সেলিনা হায়াৎ আইভী ভোটাররা তার সাথে আছে বলেও দাবি করেন।
আইভী বলেন, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে তিনি কেন গেছেন তা জানি না। উনি সংবাদ সম্মেলনে কী বলবেন তাও জানি না। তার সমর্থন দেয়া বা না দেয়ায় খুব বেশি ডিফারেন্স হয়ে যাচ্ছে। গণমাধ্যম তাকে নিয়ে সারাক্ষণ ব্যস্ত। আমি ব্যস্ত আমার জনগণ নিয়ে।
তিন আরও বলেন, বিগত নির্বাচনগুলোর দিকে দেখলে দেখা যাবে যত কিছুই হোক না কেন এখানে উৎসবমুখর পরিবেশেই নির্বাচন হয়, এবারও তাই হবে। আমি বলতে পারি নারায়ণগঞ্জবাসী আমাকে সবসময় তাদের কাছে পেয়েছে যেকোনো কাজে। নগরবাসী আমাকে গ্রহণ করবেন। নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের জল্লার পাড় থেকে তিনি বিকেলে আবার জনসংযোগ শুরু করবেন।
এদিকে, সকালে সংবাদ সম্মেলন শেষে সাড়ে ১০ টার দিকে প্রচারণা শুরু করেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার। এসময় ভয়ভীতি দেখিয়ে নির্বাচনি প্রচারণায় বাধা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার।
সকালে নারায়ণগঞ্জের মিশন পাড়ায় সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে তৈমূর আলম খন্দকার রবি নামের এক কর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নেয়া কর্মী- সমর্থকদের বাড়িতে হানা দিচ্ছে পুলিশ। কিন্তু সরকারি দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থীর প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন এমপি এবং কেন্দ্রীয় নেতারা।
তিনি বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে। সরকারি দলের লোকজনের বাড়িতেও পুলিশ পাঠিয়ে মারধর করা হচ্ছে। ধামগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামালের বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে তার কেয়ারটেকারকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রোববার রাতে লোকজনের বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে হুমকি করা হয়েছে তারা যেন আমার পক্ষে কাজ না করে নৌকার পক্ষে কাজ করে। আমার সমর্থকদের হয়রানি করা হচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রতি নিবেদন আপনারা সচেতন থাকবেন। কোনো গুজবে কান দিবেন না। অনেক নির্যাতন হবে, সে নির্যাতন প্রতিরোধ করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আপনারা যাচাই করে দেখেন কোন ঠিকাদারের প্রভাবে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন চলে। দেখবেন কোনো না কোনো নাম বেরিয়ে আসবে। যদি না আসে তাহলে বলবেন তৈমূর আলম খন্দকার মিথ্যা বলেছেন।’
এতে নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু থাকছে না। নির্বাচন কমিশনে এসব বিষয়ে অভিযোগ দিয়েও কোন সুরাহা হয়নি। কমিশন ও প্রশাসন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছে না বলেও অভিযোগ করেছেন তৈমূর আলম খন্দকার।
তবে এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী।