কালবেলা, কালপুরুষসহ একাধিক কালজয়ী উপন্যাসের লেখক প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলকাতার নিমতলা মহাশ্মশানে শুরু হয় শেষকৃত্য। এর আগে পৌনে ৮টার দিকে অ্যাপোলো হাসপাতাল মর্গ থেকে তার মরদেহ বুঝে নেয় পরিবারের সদস্যরা।
গত সোমবার (৮ মে) সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
কলকাতায় বিশিষ্টদের মৃত্যুর পরে রবীন্দ্রসদনে দেহ রাখার সরকারি রেওয়াজ চালু আছে। তবে, গতকাল সোমবার (৮ মে) বিকেলেই সমরেশ মজুমদারের কন্যা দোয়েল মজুমদার জানিয়েছিলেন রবীন্দ্র সদনে পিতার মরদেহ থাকবে না। বাবা চাইতেন না বলেই পরিবারের পক্ষে সরকারের ইচ্ছায় সম্মতি দেওয়া সম্ভব নয়। বাড়ির সামনের যে অফিসে সমরেশ মজুমদার নিয়মিত বসতেন, সেখানেই মঙ্গলবার (৯ মে) বেলা ১১টা পর্যন্ত ছিল তার মরদেহ।
এর আগে, সকাল সোয়া ৮টার দিকে মরদেহ বাড়িতে পৌঁছায়। সকাল থেকেই সমরেশ মজুমদারকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বাসভবনের সামনে ভিড় করেন অনেকেই। শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আসেন কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসের ডেপুটি হাই কমিশনার ও সাহিত্যিক আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের পুত্র আন্দালিব ইলিয়াস ও প্রথম সচিব প্রেস রঞ্জন সেন। এছাড়াও, কলকাতার মহা নাগরিক মেয়র ও পশ্চিমবঙ্গের নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য, প্রদেশ কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দল, বামফ্রন্ট সেক্রেটারি বিমান বসু, সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম, পশ্চিমবঙ্গের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা।
সমরেশ মজুমদার একাধারে নাটক, উপন্যাস, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি, গোয়েন্দাকাহিনী ও কিশোর উপন্যাস লেখক ছিলেন। মানবজীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতার রসায়ন প্রকাশ পায় তার লেখায়। বিশেষত তার উপন্যাসগুলোর বিষয়বস্তু, রচনার গতি ও গল্প বলার স্টাইল পাঠকের কাছে তার স্বকীয় উচ্চতায় আসীন করেছে।
সমরেশ মজুমদার ১৯৪২ সালের ১০ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশব কাটে ডুয়ার্সের গয়েরকাটা চা বাগানে। স্কুলজীবন শুরু জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলে। ১৮ বছর বয়সে ১৯৬০ সালে কলকাতায় আসেন। কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক সম্পন্ন করেন। স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।